স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন তছনছ.. হতদরিদ্র গৃহবধূর ঋনের টাকা নিয়ে উধাও স্বামী
………………………………………………………………………………….
সোয়েব সাঈদ, রামু ::
একটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা কিনে দিয়ে স্বামীকে স্বাবলম্বী করতে চেয়েছিলেন রামুর হতদরিদ্র গৃহবধূ রোকসানা আকতার। এজন্য নিজে সম্প্রতি দুটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ৫০ হাজার টাকার ঋন নেন। কিন্তু রিক্সা না কিনে উল্টো গোপনে সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন স্বামী মো. আরিফ। এখন এতবেশী ঋন কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী রোকসানা আকতার। রোকসানা আকতার ৬বছর বয়সী এক ছেলের জননী। বর্তমানে তিনি চারমাসের অন্তঃস্বত্ত্বা।
এ ঘটনায় হতবিহবল রোকসানা আকতার জানালেন, টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার কয়েকদিনেও স্বামীর সন্ধান না পেয়ে একপর্যায়ে আত্মহত্যা করার জন্য বিষের বোতল হাতে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে তা আর পারেননি।
হতভাগ্য রোকসানা আকতার রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ক্যান্টনমেন্ট এলাকা সংলগ্ন আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা। তিনি জানালেন, তার পৈত্রিক বাড়ি একই ইউনিয়নের দেয়াংপাড়া এলাকায়। তারা বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। নিজেদের বাড়িটুকু নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ায় স্বামী ও সন্তান নিয়ে সরকারী আশ্রয়ন প্রকল্পে ঠাঁই পেয়েছেন।
তিনি আরো জানান, প্রায় ১০ বছর পূর্বে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা, তোয়াজনগর এলাকার মো. হোছনের ছেলে মো. আরিফের সাথে তিনি কাবিননামামূলে বিয়েতে আবদ্ধ হন। বিয়ের এতদিনে তাদের মধ্যে কোন ভুল বুঝাবুঝিও হয়নি। তার স্বামী আরিফ কখনো রিক্সা চালিয়ে, কখনো দিনমজুর হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। ইতিপূর্বে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে স্বামীকে দিয়েছিলেন। সেই টাকা স্বামী পরিশোধও করেন। কিন্তু সম্প্রতি একটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা কেনার বায়না ধরেন স্বামী। সেটা বাস্তবে রূপ দিতে দুটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ৩০ ও ২০ হাজার করে মোট ৫০ হাজার টাকা ঋন নেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বাপের বাড়িতে গেলে সেই সুযোগে বাড়িতে রাখা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে সটকে পড়েন স্বামী আরিফ।
এরমধ্যে চট্টগ্রামস্থ শ্বাশুড় বাড়িসহ বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করেও স্বামীর সন্ধান পাননি তিনি। স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনেও (নং ০১৮৪৬-৪৭৫০৪১) কল করেও বন্ধ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তিনি রামু থানায় অবহিত করেছেন। এখন ঋনের টাকা শোধ কিংবা পরিবারের খরচ মেটানো কোনটাই তার পক্ষে সম্ভব হবে না। ইতিমধ্যে ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। স্বামীকে খোঁজাখুজি এবং সংসারের খরচ মেটানোর জন্য বাড়ির পুরনো খাটটি বিক্রি করতে হয়েছে।
রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য লায়লা বেগম বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এমন প্রতারক স্বামীর সন্ধান দেয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। সন্ধান পেলে মোবাইল ফোন (নং ০১৮৭২০২৫৭০১) এ যোগাযোগ করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
……………………………………………………………….
রামুতে যুব মহিলাদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ
সম্পন্নকারিদের সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান
রামু প্রতিনিধি
রামুতে দারিদ্র বিমোচন ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্য যুব মহিলাদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক ৬টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারিদের সনদপত্র বিতরণ করা হয়েছে। ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট থ্রো স্কীলস (ইয়েস) কক্সবাজার এর উদ্যোগে ইউ ফাউন্ডেশন ও স্প্রিট এর অর্থায়নে ইপসা ও হোপ ৮৭ বাংলাদেশ এর সহায়তায় এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল ১০টায় রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পানেরছড়া ইয়েস সেন্টারে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের সনদপত্র ও পোষাক সামগ্রী বিতরণ করেন, স্প্রিট বাংলাদেশ এর পরিচালক জাহিদ আবেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ইপসা’র এর পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান। এতে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত মূল তথ্য উপস্থাপন করেন, ইয়েস প্রজেক্ট এর ফোকাল পার্সন নাসিম বানু শ্যামলী।
ইপসা ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট থ্রো স্কীলস (ইয়েস) এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক একেএম মনিরুল হকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পোষাক প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান এসকিউ এর পরিচালক মো. ওয়াসিমুল আবিদ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, ইয়েস এর মাঠ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কোর্স, অফিস ম্যানেজমেন্ট এবং সেক্রেটারিয়াল প্রশিক্ষণ, হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ, বেসিক একাউটেন্সি এন্ড বুক কিপিং প্রশিক্ষণ ও ট্যুরিস্ট গাইড প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারিদের সনদপত্র ও পোষাক সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট থ্রো স্কীলস (ইয়েস) প্রকল্পের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও যুব মহিলাদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইপসা ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট থ্রো স্কীলস (ইয়েস) এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক একেএম মনিরুল হক জানিয়েছেন, এ সংস্থার অধিনে ঢাকা এবং কক্সবাজারের যুবকদের বিশেষ করে যুব মহিলাদের দারিদ্র বিমোচন ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ৬টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ কোর্স, অফিস ম্যানেজমেন্ট এবং সেক্রেটারিয়াল প্রশিক্ষণ, হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণ, বেসিক একাউটেন্সি এন্ড বুক কিপিং প্রশিক্ষণ ও ট্যুরিস্ট গাইড প্রশিক্ষণ। আগামী জুলাই মাস থেকে এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।
পাঠকের মতামত: